ক্লাশ ফোরে গনিত শেখার জন্য আয় ৫ ডলার
২৩ বছর বয়সে আমি মিলিয়ন (১০ লাখ) ডলারের মালিক হয়েছি। বয়স যখন ২৪, তখন সম্পদের পরিমাণ ১০ মিলিয়নের (১ কোটি) বেশি ছিল। ২৫ বছর বয়সে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সংখ্যাটা ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এই সংখ্যাগুলো কখনোই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। কারণ, আমি কাজটা টাকার জন্য করিনি। আমার কাছে মনে হয় টাকা একটা চমৎকার জিনিস। কারণ, এটা আপনাকে অনেক কিছু করার সক্ষমতা দেয়। স্কুল জীবনের প্রথম আয় ৫ ডলার ক্লাশ ফোরের গনিত হোম ওয়ার্ক সম্পূন করায় শিক্ষিকার উপহার ছিল। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্কটা আমার একেবারেই ভালো ছিল না। তারা আমার সব কৌতূহল কেড়ে নেওয়ার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। ক্লাস থ্রিতে ওঠার পর রিক ফ্যারেনটিনো নামের একটা খুব ভালো বন্ধু হলো। দুষ্টুমি ছিল আমাদের একমাত্র বিনোদন। ব্যাপারটা এতই গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে বেশ কয়েকবার আমাদের দুজনকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
ক্লাশ ফোরে অধ্যক্ষ বললেন, ‘ওদের দুজনকে একসঙ্গে রাখা যাবে না।’ তখন আমাদের এক শিক্ষক, মিসেস হিল বললেন, ‘আমি ওদের দুজনের মধ্য থেকে একজনকে নেব।’ ঈশ্বরের কৃপায় তিনি আমাকে বেছে নিয়েছিলেন। দুই সপ্তাহ আমাকে চোখে চোখে রাখার পর কাছে এসে বললেন, ‘স্টিভ, আমি তোমার সঙ্গে একটা চুক্তি করব। এই যে গণিতের বইটা দেখছ, তুমি যদি এটা বাসায় নিয়ে কারও সাহায্য ছাড়াই সব অঙ্ক শেষ করতে পারো, এবং তোমার অঙ্কগুলোর মধ্যে যদি শতকরা ৮০ ভাগ ঠিক হয়, আমি তোমাকে ৫ ডলার দেব।’ তাঁর দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘আপনার মাথা খারাপ হয়েছে! আপনি জানেন, এ রকম কাজ আমি কখনো করিনি।’ কিন্তু আমি সত্যিই কাজটা শেষ করেছিলাম।
মূলত, শেখার জন্য তিনি আমাকে ঘুষ দিয়েছিলেন। কখনো চকলেট, কখনো টাকা। তিনি আমার ভেতর শেখার আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছিলেন।
এটা বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস একটি সাক্ষাৎকার। ২০১১ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু অ্যাপলকে তিনি এমন একটা জায়গায় পৌঁছে দিয়ে গেছেন, এখনো এটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম।