Dream School
গাজীপুরের পূবাইলের নারায়ণকুল গ্রামে অবস্থিত সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ‘স্বপ্ন স্কুল’।
খেলার ছলে পড়া, গ্রুপ স্টাডি, সহশিক্ষা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যাক্তিদের স্কুলে এনে ড্রিম স্পিচের ব্যবস্থা করে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা যোগানো হয়। প্রতি ক্লাসে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ড্রিম কার্ড। এসব ড্রিম কার্ডে শিক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের স্বপ্নের কথা লিখে রাখে। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার সঙ্গে এখানকার শিক্ষার সমন্বয় করতে জাপানের সেরা স্কুলের ছাত্রদের সঙ্গে স্কাইপিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিনিময় করা হয়। দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের উন্নত এই শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনা খরচে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করতে স্কুলটি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বাংলা ও ইংরেজি দুই মাধ্যমেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। এখানে গতানুগতিক শিক্ষার নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্কুলের শ্রেণীকক্ষে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয় মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতিতে। রয়েছে সুদীর্ঘ খেলার মাঠসহ বৃহৎ হল রুম ও এগ্রিকালচারাল ফার্মও রয়েছে। ছয় হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন করে গড়ে তোলার জন্য সুবিশাল কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞান গবেষণাগারের সুব্যবস্থাও রয়েছে। মেধাকে শাণিত করার জন্য রয়েছে ডিবেটিং ক্লাব। স্কুলের ক্লাব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে গণিত ক্লাব, ভলেন্টারি ক্লাব, ব্যাডমিন্টন ক্লাব, অ্যাথলেটিক্স ক্লাব ও মিউজিক ক্লাব।
স্কুলের পাঠ দানের কার্যক্রমটা দেশের অন্য সব বিদ্যালয় থেকে আলাদা। এ স্কুলের প্লে, নার্সারি ও ক্লাস ওয়ানের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশুনায় খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এই তিন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের আগ্রহের বিষয়ের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই ক্লাসে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা সংক্রান্ত খেলনা সামগ্রী রাখা হয়। এগুলো দিয়ে তারা খেলাচ্ছলে বিভিন্ন বিষয় শিখে থাকে।
প্রতিবছর স্বপ্ন পূরণে সফল ব্যক্তিদের স্কুলে নিয়ে এসে ড্রিম স্পিচ (স্বপ্ন বক্তৃতা)-এর ব্যবস্থা করা হয়। এরই মধ্যে স্কুলটিতে ড্রিম স্পিচ দিয়েছেন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারজয়ী অ্যাঞ্জেলা গোমেজ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ প্রমুখ।
সম্পূর্ণ বিনা বেতনে এ বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে স্কুল ড্রেস, বই, খাতা-কলমও স্কুল থেকেই দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন দুপুরের খাবারও সরবহার করা হয় স্কুলের পক্ষ থেকে। স্কুলের নিয়মিত পরীক্ষার ফি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। এমনকি বোর্ড পরীক্ষার ফিও স্কুলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়।
Tag:Course